টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট। সরকার গঠনের প্রাক্কালে মন্ত্রিসভা একেবারে ঢেলে সাজানো হয়েছে। ৪৭ সদস্যের মন্ত্রিসভায় নতুন মুখ ৩১ জন। আর হেভিওয়েটসহ বাদ দেওয়া হয়েছে ৩৪ মন্ত্রিসভার সদস্যকে।
চমকে ভরা মন্ত্রিসভা নিয়ে ইতোমধ্যে সারা দেশে নানা আলোচনা চলছে।
অনেকে বলছেন, ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব তৈরির দিক বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, এই নিয়ে টানা তিনবারের মন্ত্রিসভা গঠনে আঞ্চলিক রাজনীতিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। দেশের অধিকাংশ জেলা এবং অঞ্চলকে টাচ করে গঠন করা হয়েছে এই মন্ত্রিসভা।
আবার অনেকে বলছেন, চমক দেয়ার ইচ্ছে থেকেও এ ধরনের পরিবর্তন করা হয়েছে।
নতুন মন্ত্রিসভা নিয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তারা এই মুহূর্তে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় এক নেতা বলেন, অঞ্চলভিত্তিক উন্নয়নের মাধ্যমে সরকারের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধিও প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্য হতে পারে।
অনেকে বলছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে নানামুখী আলোচনা ও সমালোচনার পথ বন্ধ করে নতুনদের প্রাধান্য দেয়া হয়েছে এই মন্ত্রিসভায়। পরিচিত মুখ দেখে মানুষের মাঝে সমালোচনার প্রবণতা যাতে তৈরি না হয়, এ জন্যও হেভিওয়েটদের মন্ত্রিসভার বাইরে রাখা হয়েছে।
সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ইঙ্গিত দিয়ে বলেছিলেন, ‘এবারের নির্বাচনে বড় জয়ের সঙ্গে মন্ত্রিসভায়ও থাকতে পারে বড় চমক।’
আর তারই প্রতিফলন দেখা গেছে এই মন্ত্রিসভায়।
বেশ কিছু জ্যেষ্ঠ নেতা বিগত সময়ে মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে নানা কাজে হয়েছেন ‘বিতর্কিত’।
বিশেষ করে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ প্রশ্নফাঁসসহ সারা দেশে শিক্ষা ক্ষেত্রে আলোচনা-সমালোচনার মুখে ছিলেন।
নৌমন্ত্রী শাজাহান খানও নানা কারণে ‘সমালোচিত’ হয়েছিলেন। বিশেষ করে রাজধানীতে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই শিক্ষার্থী নিহত এবং নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে সরকার সেই সময় বেশ ‘সমালোচনা’র মুখে পড়ে।
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বিরোধী রাজনীতি নিয়ে অতিমাত্রায় বেফাঁস মন্তব্য করায় সরকার অনেক সময় ‘বিব্রতকর’ অবস্থায় পড়ে। আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ ও মতিয়া চৌধুরীদের মতো নেতাদের মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দেয়ার কারণ হচ্ছে নতুনদের জায়গা করে দেয়া।